গালিবের স্মৃতি বিজড়িত দিনগুলি পর্ব-১

গালিবের দাদা বাড়ি গ্রামে। তার মানে গালিবের দাদা আর নানার বাড়ি বেশ দূরত্বে নহে অনেকটা কাছাকাছি। গালিবের দাদা বাড়ি থেকে নানাবাড়ি যেতে দশ মিনিটের চেয়েও কম সময় লাগে। গালিবের বেশির ভাগ সময়ই তার দাদাবাড়ীতে কেটেছে। নানা বাড়ি তেমন যাওয়া হত না।

গালিব তার নানা-নানিকে দেখেনি। তার জন্মের আগেই মারা যান তারা। এছাড়া গালিবের কোন মামাও নেই। যার ফলে তার কাছে তার নানা-নানি, মামা-মামী বিষয়ে তেমন গল্প নেই! বলা চলা কোন স্মৃতি নেই!

চাচ্চু, ফুফু, আর দাদা-দাদীর আদর ও দুষ্টুমিতেই গালিবের দিনগুলো কেটে যেত। যার ফলে গালিবের সবচেয়ে বেশি প্রিয় ছিল তার ছোট চাচ্চু। যার নাম মন্টু। তার চাচার হাতের লেখা দারুণ ছিল। বেশ ছবিও আঁকতে পারতেন তিনি। তার আরেক চাচ্চু ছিল রকি, তার গলা ছিল বেশ সুরেলা। গান গাইতে পারত বেশ ভালো। মিলিয়ে মিলিয়ে বেশ কবিতার ছন্দ কাটত তার মুখে মুখে। এ চাচ্চুর কাছ থেকেই গালিব পরে একটু-আধটু ছড়া-কবিতা লেখার চেষ্টা করে এসেছে।

গালিবের হাতের লেখাটাও বেশ ভালো। এই অবদানটাও ওই মন্টু চাচ্চুর কারণেই হয়েছে। এছাড়া গালিবের আরও তিনজন চাচ্চু ছিল। তারা গালিবের চেয়ে অনেক বড়। যার ফলে গালিব তাদের সাথে তেমন মিশতো না।

অন্যদিকে, ফুফুদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ফুফুটা ছিল বেশ চঞ্চল। নাম তিশা। গালিবের আম্মু এমনকি পরিবারের সকলেই গালিবের ছোট ফুফুকে তিনু বলে ডাকত। ছোট ফুফু বেশ আদর করতেন গালিবকে। গোসল করানো, জামা-কাপড় পরানো, ভাত খাওয়ানো, কোলে নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়ানো প্রভৃতি ছিল ছোট ফুফুর নিত্যদিনের কর্ম। আসলে বলতে গেলে গালিবকেই বড় করে তুলেছে তার ছোট ফুফু তিনুই।

গালিবের দাদা ছিলেন মনির আহমেদ মান্নু। ডাকনাম ছিল মন্নু। তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। গ্রামে সরল মানুষ হিসেবে তার সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। আশেপাশের গ্রামের লোকজন তাকে এক নামে চিনতো। সমীহের চোখেও দেখত সবাই। শুরুতে সে সময়ে দাদা একটা হাই স্কুলের টিচার ছিলেন। পরে তার মায়ের অনুরোধে সেই চাকরিটা ছেড়ে দেন তিনি। ওই সময় দাদাদের প্রচুর জমিও ছিল।

দাদুর মা বিশ্বাস করতেন আমাদের এই জমিজমার দেখাশুনা করলেই দাদুর সারাজীবন কেটে যাবে। তাহলে কি কারণে তাকে আবার চাকরি করতে হবে। এই কথায় তার মা তথা দাদুর মার কথায় চাকরিটা ছেড়ে দিতে হয়। পরে তবে দাদা আবারও একটা চাকরি নিয়েছিলেন।

লেখক: মো: আরমান
শিক্ষার্থী, দশম শ্রেণি, পেকুয়া সরকারি মডেল জি এম সি ইনষ্টিটিউশন, কক্সবাজার

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখার পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]]
 

Comments are closed.