কোয়ান্টামের নানা কথা পর্ব – ৩

কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর আরেক জনক শ্রোডিঙ্গার নিজের সূত্রকে ভুল প্রমাণ করতে আইন্সটাইনের সাথে যোগ দেয়। একদিকে আইন্সটাইন আর শ্রোডিঙ্গার এবং অন্যদিকে বোর এবং তার ছাত্ররা। বোর বাহিনী তখন চারদিকে কোয়ান্টাম থিওরির জয়জয়কার ছড়াচ্ছে।

তবে এর প্রেমে মজেনি শুধু আইন্সটাইন আবার সাথে পেয়েছে আরেক সঙ্গী এর ভিন শ্রোডিঙ্গারকে। কিন্তু বোরের নানা ধরনের ব্যাখ্যা শুনে শ্রোডিঙ্গার মেনে নিয়েছে কোয়ান্টাম থিওরি। তবে আইন্সটাইন কোয়ান্টাম থিওরি বিশেষত অনিশ্চয়তার ধরে মানতে একদম নারাজ। লেগে পড়লেন একে ভুল প্রমানের জন্য। তবে তার যেন বারবার হার হচ্ছিল। কোয়ান্টাম থিওরি যখন প্রায় শক্ত কাঠামো ধারণ করেছে। ঠিক তখনই আইন্সটাইন কোপ মেরে বসে। তিনি আর কয়েক জন বিজ্ঞানী মিলে একটা থট এক্সপিরিমেন্ট এর কথা বলেন।

মনে করি, দুটি সমান ভরবেগ এবং পরস্পর বিপরীত স্পিন (একটি কণা যদি একদিকে ঘুরে অন্যটি সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে ঘুরবে) বিশিষ্ট কণাদ্বয়কে আমরা সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে (180°) ছুরে মারলাম। তারা যেতে যেতে যখন ৩ লক্ষ কিলোমিটার থেকে বেশি দূরে চলে যাবে তখন যদি আমরা একটি কণার স্পিন নির্ণয় করি তবে সাথে সাথে আমরা অপর কণার স্পিন ও  জেনে যাবে যেহেতু তাদের স্পিন সম্পূর্ণ বিপরীত। (নিচের চিত্রে তীর চিহ্ন(→)দিয়ে ক্ণার স্পিন বোঝানো হচ্ছে। একটির স্পিন উপরের দিকে হলে আরেকটির নিচের দিকে হবে।)

কিন্তু তাদের দূরত্ব কিন্তু ৩ লক্ষ কিলোমিটার থেকে বেশি। মনে করি, কণাগুলোর মধ্যে দুরত্ব হলো ৫লক্ষ কিলোমিটার। এখন আমরা একটা কণার স্পিন জানলে ওই ৫লক্ষ দূরের কণার স্পিন ও জেনে ফেলব।

অর্থাৎ, ৫লক্ষ কিলোমিটার দূর থেকে আমরা কণার স্পিনের তথ্য ১ সেকেন্ডের মধ্যে জেনে ফেলছি। তাই ওই তথ্যের বেগ সেকেন্ডে ৫ লক্ষ কিলোমিটার। তবে আমরা জানি, আলোর বেগ সেকেন্ডে ৩ লক্ষ কিলোমিটার। এবং আইন্সটাইনের “স্পেশাল থিওরি অব রিলেটিভিটি” থেকে আমরা জানি কোনো কিছুর বেগই আলোর বেগ থেকে বেশি হতে পারে না। এর মাধ্যমে আইন্সটাইন কোয়ান্টাম থিওরি যে ভুল তা প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন।

কিন্তু তার সব পরিশ্রমে পানি ঢেলে দিয়ে নিলস বোর বললেন যে বাস্তব জগতের অনেক কিছুর সাথেই কোয়ান্টাম জগতের মিল নেই। তাই তথ্য আমর আলোর বেগ থেকে বেশি বেগে আদান-প্রদান করতে পারি তাতে কোনো সমস্যা নেই। আর কোয়ান্টামের এই ঘটনাকে বলে “কোয়ান্টাম এন্টাঙ্গেলমেন্ট”। এভাবে আবারও কোয়ান্টাম থিওরি শক্ত ভিতে দাড়ালো।

জয় সরকার
শ্রেনী: দশম শ্রেণী,সাটিরপাড়া কে.কে. ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজ, নরসিংদী।

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]] 

Comments are closed.