স্মৃতি মাখানো শৈশবের দিনগুলি 

২০১৭ সালের দিকের ফিরে দেখা দিনগুলো নিয়ে লিখতাছি। এখনো সেই সময়ে ঘটনাগুলো কথা মনে পড়ে যায়। সেই সময়ে আমার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এখন নেই কোন পড়াশোনা, তাই মনে একটা খুশির আমেজ।

পড়াশোনা না থাকায় সারাদিন বন্ধুদের সাথে আড্ডা ও ঘুরাঘুরি করেই সময়ে কাটাই। সেই ধাবাহিকতায় একদিন শীতের সকালে আমি ও আমার দুই বন্ধু রায়হান এবং তাজু  একসাথে হাঁটতে বের হয়েছি। ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জের গ্রামের কাঁচা রাস্তা ভোরের কুয়াশায় ভিজে কাঁদা কাঁদা হয়ে রয়েছে। সেই রাস্তা দিযে আমার তিন বন্ধু হেঁটে চলছি।

আমাদের সামনে বিশাল এক ধান ক্ষেত। রাস্তার পাশে এই ধান ক্ষেতের পাশ দিয়ে জীবনে অনেক হেঁটে গেছি। এর বিশালতায় মুগ্ধ হয়েছি। তবে কখনো এর শেষ প্রান্তে কি রয়েছে তা দেখা হয়নি। তিন বন্ধু ঠিক করলাম আজ দেখেই ছাড়বো ধানক্ষেতের শেষ প্রান্তে কি রয়েছে। ক্ষেতের আইলে শিশির জমে রয়েছে। সেই আইল দিয়ে জুতা খুলে হাতে নিয়ে খালি পায়ে হাটতে ছিলাম। পায়ের পাতায় ঠান্ডা শিশির লাগছিল। বেশ অনুভুতি লাগছিল।

কৈশোর এর টগবগে রক্ত তখন আমার শিরাধমনীতে ছুটে চলেছে। নিজের অজান্তেই সেই টগবগে রক্ত শিরদাঁড়া বয়ে একটা ঢেউ খেলে গেলো। ধান ক্ষেতের ঠাণ্ডা হাওয়া আমার গায়ে এসে লাগছিলো। ধানের মিষ্টি গন্ধ মনে একটা মাদকতা সৃষ্টি করছিলো। আহা! আমার সোনালী শৈশবের সবুজ স্মৃতি।

এখন বড় হয়ে যাওয়ার পর শৈশবের স্মৃতিগুলো খুব মিস করি। অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম শৈশবের স্মৃতিগুলো ফিরিয়ে আনতে তবে সেটা হয়নি। অবশেষে বুঝতে পেরেছি শৈশবের সেই নির্ভেজাল সুলভটি আমি আর নেই।

সেই সুলভের মস্তিষ্কে জায়গা করে নিয়েছে নানান জটিল চিন্তাভাবনা। তাই এখন ছোটবেলার দুষ্টুমিগুলো করলেও শিরদাঁড়া বয়ে আর ঢেউ খেলে যায় না। অনুভূতিগুলো কেমন যেন ভোতা হয়ে গেছে। এটাকেই হয়তো বলা হয় বয়স বেড়ে চলা।

মো: পারভেজ হাসান
শিক্ষার্থী, নবম শ্রেণী,পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ঠাকুরগাঁও

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]

Comments are closed.