পানির জন্য হাহাকার  খুলনায়

পানির জন্য খুলনা শহরজুড়ে হাহাকার শুরু হয়েছে। কেবলমাত্র গরম পড়তে শুরু করলেও এরই মধ্যে শুকিয়ে গেছে নগরীসহ জেলার পুকুর, জলাশয় ও খালগুলো। এমনকি দীর্ষসময় ধরে নলকূপ চেপেও উঠছে না পানি।

ওয়াসার পানি ঘরের কাজে কিছুটা ব্যবহার করা সম্ভব হলেও পানযোগ্য পানির মহা সংকট দেখা দিয়েছে। শুধু খুলনা নয়, আশপাশের জেলা-উপজেলার গ্রামগুলোতেও সৃষ্টি হয়েছে একই অবস্থা।

কিছু মানুষ নিজ উদ্যোগে এলাকাবাসীর জন্য খাবার পানির ব্যবস্থা করেছেন। তবে সেসব স্থানেও পানি নিতে ভিড় জমছে মানুষের। দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

খুলনা মহানগরীর লবণচরা এলাকার বাসিন্দা সেলিম গাজী বলেন, পানির জন্য খুলনা শহরজুড়ে হাহাকার শুরু হয়েছে। কেবলমাত্র গরম পড়তে শুরু করলেও এরই মধ্যে শুকিয়ে গেছে নগরীসহ জেলার পুকুর, জলাশয় ও খালগুলো। এমনকি দীর্ষসময় ধরে নলকূপ চেপেও উঠছে না পানি। তিনি বলেন, পানির জন্য খুলনা শহরজুড়ে হাহাকার শুরু হয়েছে। কেবলমাত্র গরম পড়তে শুরু করলেও এরই মধ্যে শুকিয়ে গেছে নগরীসহ জেলার পুকুর, জলাশয় ও খালগুলো। এমনকি দীর্ষসময় ধরে নলকূপ চেপেও উঠছে না পানি।

নগরীর টুটপাড়া ঘোষের ভিটা এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘টিউবওয়েল আমাদের একমাত্র খাবার পানির উৎস। কিন্তু টিউবওয়েল চাপলে পানি উঠছে না। যে কারণে আমাদের মতো যারা অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকেন তাদের জন্য খাবার পানির সমস্যাটা প্রকট।’

স্থানীয় মিজানুর রশিদ বলেন, ‘এলাকার একমাত্র সচল নলকূপটি ভালো রাখার চেষ্টা চলছে। তবে এই নলকূপ থেকে ভোর আর গভীর রাত ছাড়া এখন পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ওয়াসার পানি কেউ খেতে চান না।’

পানির সংকট খুলনার মহানগরী  ছাড়াও ভয়াবহ অবস্থা খুলনার কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা উপজেলার গ্রামগুলোতেও। পাইকগাছা পৌর এলাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে কিছু এলাকায় পানি সরবরাহ করা সম্ভব হলেও কয়রা উপজেলায় সেই সুযোগ খুব কম। এ উপজেলায় পানির সংকট সবচেয়ে বেশি বলে জানান এলাকাবাসীরা।

কয়রা উপজেলার উত্তরবেদকাশী এলাকার বাসিন্দা সিরাজুদ্দৌলা লিংকন ও কবির হোসেন বলেন, ‘বর্ষার মৌসুম শেষ হলেই আমাদের এলাকায় শুরু হয় পানীয় পানির জন্য দৌড়ঝাঁপ। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, পুকুর পাড়ে বালির ফিল্টার এসব কোনো কাজে আসে না। ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার দূর থেকে পানি আনা-নেওয়া এখন এ এলাকার মানুষের নিত্যদিনের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

কয়রা সদর এলাকার মধুর মোড়ের বাসিন্দা সুভাষ চন্দ্র জানান, বর্তমানে এলাকায় বোতলজাত পানি সরবরাহের সামান্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই পানি সরবরাহ করা হয়। যারা বেশি দামে এলাকার মধ্যে থেকে পানি নিতে পারছেন না তাদের খাবার পানির জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে।

খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আকতারুজ্জামান বাবু বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকা কয়রা-পাইকগাছা দুটিই উপকূলীয় উপজেলা। দুই উপজেলায়ই বর্ষার মৌসুম শেষ হতে না হতেই পানীয় পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়ে যায়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারিভাবে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুত এলাকাবাসীর পানির চাহিদা পূরণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।’

খুলনা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, খুলনায় গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু হতে না হতেই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পানির স্তর আরও কমছে।

তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দিনে দুইবার পানি সরবরাহ করা হয়। এছাড়া ৫৫টি উত্তোলক পাম্প প্রায় সারাদিনই চালু থাকে। ফলে এখন পানির খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ বলেন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার সমাধান এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। তারপরও বেশি সময় পানির পাম্প চালিয়ে কিছুটা অতিরিক্ত পানি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সূত্র: জাগোনিউজ২৪.কম

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]

Comments are closed.