পা দিয়ে লিখে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেলেন তামান্না

জন্ম থেকেই তামান্না আক্তার নূরার দুই হাত ও এক পা নেই। পায়ের আঙুল দিয়ে লিখে এবারের এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তামান্না। ২০১৯ সালে বাঁকড়া জনাব আলী খান মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন তিনি।

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুর গ্রামের রওশন আলী ও খাদিজা পারভীন দম্পতির মেয়ে মেধাবী এ শিক্ষার্থী। ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন তামান্না আক্তার নূরা। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তিনি।

নুরার বাবা রওশন আলী ঝিকরগাছা উপজেলার ছোট পৌদাউলিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার (নন-এমপিও) শিক্ষক। মা খাদিজা পারভীন গৃহিণী। তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে তামান্না সবার বড়।

তামান্না একজন ভালো মানুষ হতে চান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে চান। লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস দিয়ে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা হতে চান তামান্না।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১২ ডিসেম্বর তামান্নার জন্ম। দুই হাত ও এক পা ছাড়াই মায়ের গর্ভ থেকে পৃথিবীতে আসেন তামান্না। ছোটবেলায় মেয়ের পায়ে কাঠি দিয়ে লেখানোর চেষ্টা করতেন মা খাদিজা। এরপর বাঁকড়া আজমাইন এডাস স্কুলে ভর্তি করানো হয়। মাত্র দুই মাসেই পা দিয়ে লিখতে শুরু করেন। এছাড়া ছবি আঁকাও শেখেন। ২০১৩ সালে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ও পেয়েছেন। সেই সাথে  বৃত্তিও পান। এরপর ভর্তি হন বাঁকড়া জনাব আলী খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পান।

বাবা রওশন আলী বলেন, ‘মেয়েটির ইচ্ছা পূরণে যশোর শহরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে কোচিং করাচ্ছি। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মেয়ের জন্মের পর থেকে নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। আমরা হাল ছাড়িনি। পরীক্ষায় তার ফলাফলে আমরা খুবই খুশি। সরকারি সহায়তা পেলে মেয়ের ইচ্ছা পূরণ করা সম্ভব।’

বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শামছুর রহমান বলেন, সব প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সে ভালো ফল করেছে। একটু সহায়তা পেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তামান্নার ভর্তির ইচ্ছে পূরণ হতে পারে।’ সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]

Comments are closed.