রাতারগুল

রাতারগুল জলাবন বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন বা সোয়াম্প ফরেস্ট এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এটি পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি জলাবনের মধ্যে অন্যতম। এখানে হিজলে ফল ধরে আছে শয়ে শয়ে। বটও চোখে পড়বে মাঝেমধ্যে, মুর্তা গাছ কম। বড়ই অদ্ভুত এই জলের রাজ্য। কোথাও চোখে পড়বে মাছ ধরার জাল পেতেছে জেলেরা।

রাতারগুল যা বাংলার অ্যামাজন নামেও পরিচিত। সিলেটের স্থানীয় ভাষায় মুর্তা বা পাটি গাছ “রাতা গাছ” নামে পরিচিত। সেই রাতা গাছের নামানুসারে এ বনের নাম রাতারগুল।

সিলেট জেলার গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে, গুয়াইন নদীর দক্ষিণে এই বনের অবস্থান। বনের দক্ষিণ দিকে আবার রয়েছে দুটি হাওর: শিমুল বিল হাওর ও নেওয়া বিল হাওর। সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব ২৬ কিলোমিটার।

বর্ষাকালে এই বন ২০–৩০ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। এখানে গাছের ডালে ডালে ঘুরে বেড়ায় নানান বন্য প্রাণী আর পাখি। শীতে জল শুকিয়ে যায় বলে বর্ষা এবং বর্ষা পরবর্তী সময় (জুলাই থেকে অক্টোবর) রাতারগুল ভ্রমণের উপযুক্ত সময়।

বনের আয়তন তিন হাজার ৩২৫ দশমিক ৬১ একর। এর মধ্যে ৫০৪ একর বন ১৯৭৩ সালে বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। রাতারগুল একটি প্রাকৃতিক বন। এরপরেও বন বিভাগ হিজল, বরুণ, করচ আর মুতা-সহ কিছু জলবান্ধব জাতের গাছ লাগিয়ে দেয় এ বনে। এছাড়াও রাতারগুলের গাছপালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল— কদম, জালিবেত, অর্জুনসহ জল সহিষ্ণু প্রায় ২৫ প্রজাতির গাছপালা। বড়ই অদ্ভুত এই জলের রাজ্য। কোনো গাছের হাঁটু পর্যন্ত ডুবে আছে পানিতে।

পুরাতন দুটি বড় জলাশয় ছাড়াও ২০১০-১১ সালে রাতারগুল বনের ভেতরে পাখির আবাসস্থল হিসেবে ৩.৬ বর্গকিলোমিটারের একটি বড় লেক খনন করা হয়।

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]

Comments are closed.