নবজাতক, শিশু ও তরুণদের অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসট্যান্স বাড়ছে
চট্টগ্রামে বেড়েই চলছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসট্যান্স অকার্যকারিতা যা এক গবেষণায় জানা গেছে। যা বড়দের চেয়ে নবজাতক, শিশু ও তরুণদের মধ্যে এ হার সবচেয়ে বেশি।
সম্প্রতি গবেষণা প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা জার্নাল ‘প্লস ওয়ান’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সালের প্রথম পর্যন্ত চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা ১ হাজার নিউমোনিয়া রোগীদের ৭০ শতাংশের মধ্যে কমপক্ষে ৩টি অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকারিতা হারিয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ৪ জন নিউমোনিয়া আক্রান্ত পুরুষের মধ্যে ৩ জনের শরীরেই মাল্টিড্রাগ রেজিসট্যান্স কার্যকারিতা হারিয়েছে।
গবেষণাগারে সম্পূর্ণ কাজের পরিচালনা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফরোজা আকতার তন্বী। গবেষকদলের অন্যতম ডা. ওয়াজির আহমেদ বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসট্যান্স বর্তমান বিশ্বে একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। অণুজীবের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা যত কমে যাবে তত বেশি এই সব জীবাণুর সংক্রমণ বেড়ে যাবে এবং এসব সংক্রমণের চিকিৎসার উপায় বা প্রতিষেধক কমে যাবে। সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করবে।’
এই গবেষণায় চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ক্লেবসিয়েলা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাধিক ব্যবহৃত ২০টি অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এতে সেফুরিক্সিম, সেফিক্সিম, সেফটেক্সিম ও সেফটাজিডিম গোত্রের অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা সবচেয়ে কম দেখা গেছে।
গবেষকরা পিসিআর, জিন সিকুয়েন্সিং ও বায়োইনফরমেটিক্স পদ্ধতির বিশ্লেষণের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকারিতার জন্য যে জিনগুলো দায়ী সেগুলো অনুসন্ধানে দেখেছেন। এতে নিউ দিল্লি মেটালোভাইরাস (এনডিএম-১) জিনটির উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি রয়েছে। তবে সেই এলাকায় রোগীদের মধ্যে এই জিনের গঠন কিছুটা ভিন্নতা দেখা মিলেছে।
আরও জানা গেছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে হাসপাতাল থেকে অনেক রোগী অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হচ্ছেন। যেখানে হাসপাতালের বেসিনের পানি, নালার পানি, বিছানার চাদর, দেয়ালের নানা নমুনাতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
গবেষণা প্রবন্ধে গবেষকরা বলেছেন, অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত কিংবা অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার শরীরে অণুজীবগুলোকে অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে টিকে থাকতে সক্ষম করে তোলে এবং পরবর্তীতে অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ওই ব্যাকটেরিয়া বা অণুজীবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা হারায়। ফলে ওই রোগে আক্রান্তদের জন্য আর কোনো প্রতিষেধক বা চিকিৎসার উপায় থাকে না।
এছাড়াও, একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা রোগীকে তীব্র সংক্রমণ ঝুঁকিতে ফেলে। বি: দ্র: ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনের আলোকে সংক্ষেপে প্রকাশিত।
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন
[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]
Comments are closed.