‘সোলার ক্যাপ ফ্যান’ রোদ থেকে কৃষকদের বাঁচাবে

জামালপুরের এক ইলেক্ট্রিশিয়ান কৃষকের কষ্টের কথা চিন্তা করে রোদ থেকে কৃষকদের বাঁচাতে সোলার ক্যাপ ফ্যান আবিষ্কার করছেন। দীর্ঘ নয় মাসের চেষ্টায় সোলার ফ্যানটি তৈরি করেন তিনি।

ইলেক্ট্রিশিয়ান রাজু আহমেদ জামালপুর সদর উপজেলার শরীফপুর গ্রামের ইলিয়াসের ছেলে। শরীফপুরে বাজারে একটি দোকান রয়েছে তার। রাজু ৩৫ বছর ধরে ইলেকট্রিকের কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণাগারে সারাদেশের মধ্যে বিজ্ঞানী হিসেবে ২২তম স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন তিনি।

সোলার ক্যাপ ফ্যান আবিষ্কার করতে রাজু একটি ২০ ওয়াটের সোলার প্যানেল, সামনে ও পেছনে ৫ ওয়াটের ২টি কম্পিউটার কুলিং ফ্যান ব্যবহার করেছে। এছাড়াও ফ্যানটি তৈরিতে অ্যালুমিনিয়াম পাতলা পাইপ ও কোমরের সঙ্গে বেঁধে রাখার জন্য একটি বেল্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এই ফ্যানটি তৈরি করতে ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা খরচ হয়েছে। দীর্ঘ নয় মাসের চেষ্টায় ছয় কেজি ওজনের সোলার ফ্যানটি তৈরি করেছেন তিনি।

সোলার ক্যাপ ফ্যান: কুলিং ফ্যানে মোটর দুটি মোডিফাই করে সোলার প্যানেলে চলার উপযোগী করা হয়। সূর্যের তাপে সোলার প্যানেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে দুটি কুলিং ফ্যান চলবে। এটি মাথায় দিয়ে সারাদিনই কাজ করতে পারবে কৃষক। এটি রোদেই চার্জ হবে। যদি রোদ না থাকে তারপরেও ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা চলবে। ওজন বেশি হওয়ায় তবে গবেষণা করে ওজন কমিয়ে আধা কেজি থেকে এক কেজিতে আনা সম্ভব বলে রাজু আহমেদ জানিয়েছেন।

রাজু আহাম্মেদ বলেন, একদিন দোকানের কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। হঠাৎ দেখি মাঠে কাজ করতে গিয়ে এক কৃষক মাথা ঘুরে পড়ে যান। পরে দৌড়ে গিয়ে তাকে মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করি। সে অতিরিক্ত রোদ আর গরমে মাথা ঘুরে পড়েছিলেন। ওই ঘটনার পর থেকে কৃষকদের জন্য আমি এই ফ্যান তৈরি করতে চিন্তা করি।

আরো বলেন, আমি কৃষকের কষ্টের কথা চিন্তা করে সোলার ফ্যানটি তৈরি করেছি। এ ফ্যান ব্যবহারে কৃষকের মাথায় বাতাস যোগাবে। আর মাথার উপরে থাকা সোলার প্যানেল কৃষককে রোদের তাপ থেকে রক্ষা করবে। এতে বেশি রোদেও মাঠে কাজ করতে কৃষকের আর কোনো ক্লান্তি আসবে না।

সকলের সহযোগিতা চেয়ে আবিষ্কারকারী রাজু বলেন, আমি আমার আবিষ্কার সোলার ক্যাপ ফ্যান বাজারজাত করতে চাই। সারাদেশের সব কৃষক ভাইদের মাঝে পৌঁছে দিতে চাই। এর জন্য আমি কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

শরীফপুর বাজার কমিটির সভাপতি আনিছুর রহমান বলেন, রাজু আমাদের জামালপুরের গর্ব। রাজুকে সকলে সহযোগিতা করলে তার আবিষ্কারগুলো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছালে দেশের অনেক কাজ আসবে।

জামালপুর কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মঞ্জুরুল কাদির কৃষকদের দিয়ে রাজুর আবিস্কৃত সোলার ক্যাপ ফ্যানটি পরীক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, এটি নতুন একটি আইডিয়া। রাষ্ট্রীয় বা কোম্পানি সহযোগিতা করলে যন্ত্রটি কৃষি এবং শিল্প ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। তথ্য-ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]

Comments are closed.