প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও মক্কায় গিয়ে হজ কার্যক্রম সম্পন্ন করে ফিরে আসার সামর্থ্য রয়েছে এমন প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষের ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। তবে নারীদের জন্য স্বামী বা মাহরাম পুরুষ সাথে থাকতে হবে। এছাড়া বাচ্চাদের রোজা-নামাজ যেমনভাবে গ্রহণযোগ্য তেমনিভাবে তাদের হজও শুদ্ধ হবে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, এক মহিলা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে একটি শিশু নিয়ে এলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এই বাচ্চারও কি হজ আছে? আল্লাহর রাসুল উত্তর দিলেন, হ্যাঁ! তবে এর সওয়াব তুমি পাবে। এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, বাচ্চাদের হজ শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য। তবে বাচ্চাদের হজের সওয়াব এবং প্রতিদান পিতা-মাতা এবং অভিভাবক পেয়ে থাকেন। সায়েব ইবনে ইয়াজিদ (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আমার বয়স তখন ৭। আমার আব্বা-আম্মা আমাকে সাথে নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হজ পালন করেছেন।’
শিশুদের হজ হলো নফল হজ: বাচ্চাদের ওপর যেহেতু হজ ফরজ নয় তাই তাদের হজ নফল বলে গণ্য হবে। বালেগ হওয়ার পর যদি তার হজ ফরজ হয়, তাহলে ফরজ হজের নিয়ত করে তাকে আবারও হজ পালন করতে হবে। হজ পালনকারী ছেলে বা মেয়ে খুব ছোট বয়সের হলে এবং বিবেকবুদ্ধি না হলে তার পক্ষ থেকে তার পিতা-মাতা ইহরামের নিয়ত করবে। এই ইহরাম ওয়াজিব নয়। তবে ইহরামের নিয়ত না করলেও কোনো অসুবিধা নেই।
বাচ্চাদের পক্ষ থেকে অভিভাবকই হজের সকল কাজ সম্পাদন করবে এবং বাচ্চাদের সেসব কাজ থেকে বিরত রাখবে, যা একজন ইহরামধারী পুরুষ বা মহিলার বিরত থাকতে হয়। তাওয়াফের মধ্যে তাদের শরীর ও কাপড় পবিত্র রাখার চেষ্টা করবে। তবে যদি ইহরামপরিপন্থী কোনো কাজ হয়ে যায়, তখন শিশু বা তার অভিভাবকের ওপর কোনো ‘দম’ (পশু জবাই করা) ওয়াজিব হবে না।
শিশু যদি বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন হয়: যদি শিশু বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন হয়, তাহলে সে মাতা-পিতার বা অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে ইহরাম বাঁধবে। অজু ও পাক-পবিত্রতার প্রতি লক্ষ রাখবে এবং সেসব বিষয়ের প্রতি পুরো যত্নবান থাকবে। যার প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বা মহিলা যত্নবান থাকে।
এছাড়া যেসব কাজ বাচ্চা নিজে আদায় করতে পারবে না, যেমন পাথর নিক্ষেপ ইত্যাদি, সেগুলো অভিভাবক তার পক্ষ থেকে আদায় করবে। তবে আরাফার ময়দানে অবস্থান, মিনা ও মুজদালিফায় রাত্রি যাপন, তাওয়াফ ও সায়ি ইত্যাদি সে নিজেই আদায় করবে। তবে আদায় করতে না পারে, তখন অভিভাবক তাকে কোলে বা কাঁধে নিয়ে তাওয়াফ ও সায়ি করাবে। তাওয়াফ ও সায়ি করানোর সময় নিজের এবং বাচ্চার উভয়ের নিয়ত করাবে। তাহলে উভয়ের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে।
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন
[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]
Comments are closed.