জুমার দিন যেসব আদব ও আমল করা আবশ্যক

প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনের চেয়েও উত্তম।’ আল্লাহ তাআলা এ দিন আজানের সঙ্গে সঙ্গে নামাজে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

জুমার দিনের অন্যতম আদব ও আমলগুলো হলো:

মেসওয়াক করা: মেসওয়াক করা ফজিলতপূর্ণ কাজ। আর জুমার দিন অজু ও গোসলে মেসওয়াক করা অন্যতম আদবের অন্তর্ভূক্ত। (ইবনে মাজাহ, বুখারি)

গোসল করা: পবিত্রতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য গোসল করা জুমার দিনের অন্যতম আদব। যাদের উপর জুমার নামাজ পড়া ফরজ; তাদের জন্য এ দিন গোসল করাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবশ্যক করেছেন।’ (বুখারি)

সুগন্ধি ব্যবহার করা: জুমার দিনের অন্যতম আদবসমূহের মধ্যে একটি হলো সুগন্ধি লাগানো। এতে ইবাদত-বন্দেগিতে মন প্রফুল্ল থাকে। (বুখারি)

সুন্দর পোশাক পরা: ইবাদতের শ্রেষ্ঠ দিনে উত্তম পোশাক পরা জুমার দিনের অন্যতম আদব। এদিন সম্ভব হলে নতুন কাপড় পড়া। অন্যথা যেসব কাপড় আছে সেগুলো ভালোভাবে পরিচ্ছন্ন করে তা পরে জুমার নামাজ পড়তে যাওয়া। (ইবনে মাজাহ)

হেঁটে মসজিদে আসা: জুমার দিন মসজিদে হেঁটে আসা এ দিনের অন্যতম আদব। কারণ এদিন মুসল্লির প্রতিটি কদমে কদমে আল্লাহ তাআলা এক বছরের নামাজ ও রোজা সাওয়াব দান করেন।’ (আবু দাউদ)

সবার আগে মসজিদে আসা: জুমার দিন আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিংবা তারও আগে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে আগে আগে মসজিদে এসে উপস্থিত হওয়া জুমার দিনের অন্যতম আদব।’ (বুখারি ও মুসলিম)

মনোযোগের সাথে খুতবাহ শোনা: জুমার দিনের অন্যতম আদব হলো চুপ থেকে মনোযোগের সঙ্গে খুতবাহ শোনা। এ দিন মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শোনা আবশ্যক ও অনেক ফজিলতপূর্ণ কাজ। (বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

জুমার নামাজ পড়া: জুমার দিনের মূল কাজ হলো- জুমার নামাজ পড়া। জুমার নামাজ পড়ার বরকতপূর্ণ মর্যাদা হলো- এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা এবং আরও তিন দিন মোট দশ দিনের গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর দিনটি ইবাদতের দিন হিসেবে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

সুরা কাহফ পড়া: সুরা কাহফ পড়া জুমার দিনের অন্যতম আদব ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। এ ইবাদতে এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সময়ের দিনগুলোকে আলোকিত করে দেয়। জুমার দিন সুরা কাহফের অনেক ফজিলত আছে। তন্মধ্যে অন্যতম হলো, দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্তি ও আসমান থেকে সাকিনাহ বা প্রশান্তি নাজিল হয়।’ (মুসতাদরাকে হাকেম, বায়হাকি)

বেশি বেশি দরূদ পড়া: জুমার দিনের অন্যতম আদব ও আমল হলো- এ দিন বেশি বেশি দরূদ শরিফ পড়া। দিনটিতে দরূদ শরিফ পড়লে মহান আল্লাহ বান্দার ৮০ বছরের গোনাহ ক্ষমা করে দেন।’ (আবু দাউদ)

দোয়া করা: জুমার দিন দোয়া কবুলের বিশেষ কিছু মুহূর্ত আছে। এ সময়গুলোতে দোয়া করলে মহান আল্লাহ বান্দার সব দোয়া কবুল করে নেন। যদি পরের হক বা অধিকার সংক্রান্ত ও হারাম কোনো বিষয় না থাকে।

মুমিন মুসলমানের উচিত, দিনটি যথাযথ মর্যাদা ও সম্মানের সাথে আদব রক্ষা করে ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিনের আবদ ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদতগুলো আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]

Comments are closed.