নারিকেলের তিনটি চোখ থাকে কেন?

আমাদের চারপাশে লুকিয়ে আছে নানা রহস্য। কোনো কোনো রহস্য এতটাই সরল যে, যা আমাদের চোখেই পড়ে না। তবে আমরা কি কখনো খেয়াল করে দেখেছি নারিকেলের গায়ে তিনটি চোখের মতো দেখা যায় কেন? আজকের ফিচারে এ রহস্যময় মজার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

কাঁচা অথবা ছোট অবস্থায় একে ডাব এবং পাকার পর একে ঝুনা নারিকেল বলা হয়। প্রাকৃতিক ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর ডাবের পানি অনেকের কাছেই বেশ প্রিয়। এ পানি আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারিতা রয়েছে। এছাড়া নারিকেল দিয়ে বেশ মজাদার খাবার তৈরি করা হয়। তাহলে নারিকেলের মজার এ রহস্য নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক এবার-

আমরা সবাই জানি,  ফুল থেকে ফল হয়। আর সব ফুল থেকে যে ফল হবে এমন কোনো কথাও নয়। যেমন : জবা গাছ এর ফুল আছে কিন্তু কোনো ফল হয় ন।  আবার ফুল থেকে ফল হয় মানে এই নয় যে ফুলের সব অংশ মিলেই ফল হবে। ফল মূলত ফুলের গর্ভকেশর থেকেই তৈরি হয়।

নিদির্ষ্ট করে বললে বলা যায়, গর্ভকেশর এর তলায় দিকে যে ফোলা অংশ থাকে যাকে গর্ভাশয় বা ডিম্বাশয় বলে, সেই গর্ভাশয় বা ডিম্বাশয় পরিবর্তিত হয়েই ফল তৈরি হয়। ফুলের ডিম্বাশয় বা গর্ভাশয় একটা গর্ভকেশর থেকেও তৈরি হতে পারে। আবার অনেকগুলো গর্ভকেশরের গর্ভাশয় মিলে একটা গর্ভাশয় তৈরি হওয়াও সম্ভব রয়েছে।

নারিকেলে তিনটি গর্ভকেশর থাকে, এই গর্ভকেশরের  গর্ভাশয়ে তিনটি প্রকোষ্ট বিদ্যামান।  প্রতি প্রকোষ্ঠ এ একটি করে ডিম্বক আছে।  এর মধ্যে থেকে একটি  ডিম্বক  থেকেই বীজ হয়। বাকী দুটি প্রকোষ্ঠ ডিম্বকসহ নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে অবশেষে পরিনিত নারিকেলের একটাই বীজ থাকে এবং একটাই প্রকোষ্ঠ তৈরি হয়

 নারিকেলের পুরুষ ফুলের পরাগরেনুর সঙ্গে স্ত্রী ফুলের ডিম্বাশয়ের একটি ডিম্ববকের  মিলন ঘটে। এতে একটা বীজ তৈরি হয়। এই মিলনের ফলে ডিম্বাশয় এতো দ্রুত বাডতে থাকে যে অন্য দুটা প্রকোষ্ঠের ডিম্বাশয় নষ্ট হয়ে যায়। অবশেষে প্রকোষ্ঠ দুটো বিলুপ্ত ঘটে। এতে একটি মাত্র বীজ নিয়ে একটি প্রকোষ্ঠ বাডতে থাকে এবং ফল তৈরি হয়। এই ভাবে একটি মাত্র বীজ যুক্ত এক প্রকোষ্ঠের ফল তৈরি হলেও ফলের মাথায় তিনটি গর্ভকেশরের চিহ্ন থেকে যায়।

ভেতরের একটি বীজ এবং একটি প্রকোষ্ঠ দেখে মনে হতে পারে নারিকেলের একটি গর্ভকেশর থাকে। তবে একটি গর্ভকেশর পরবর্তিত হয়ে ফল তৈরি হলেও তিনটি চিহ্ন দেখলেই বুঝা যায় মোট কয়টি গর্ভকেশর ছিল। তবে এই চিহ্নগুলো ফলের অন্তত্বকে চোখের মতো দেখা যায় বলেই আমরা সকলেই চোখ হিসেবে বলে থাকি।

আতিক হাসান
দ্বাদশ শ্রেণী, ইব্রাহীম খাঁ সরকারী কলেজ ভূয়াপুর,টাঙ্গাইল।

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]

Comments are closed.