ধারাবাহিক গল্প “গন্তব্য”-পর্ব ৪

এইভাবেই তরুণ প্রজন্ম থেকে দেশীয় সংস্কৃতির হারিয়ে যাচ্ছে। যাই হোক অবশেষে একটা প্রত্রিকা পাওয়া গেল তাও সেটা দুই দিন আগের। সেটা হাতে নিয়ে সাথে আরেক কাপ কফি নিলাম। এইদিকে বাহিরের মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে, দেখে মনে হচ্ছে অল্প সময়েই থামবে না বৃষ্টি।

পুরাতন পত্রিকা হলেও বৃষ্টির মাঝে সময় পার করার জন্য সঙ্গী করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত টা খারাপ নয়। প্রত্রিকার পাতায় চোখ রাখতেই সড়ক দুর্ঘটনার খবর দেখতে পেলাম, তবে তা বেশি সময় ধরে পড়া হলো না আর কেন না বড় করে হেড লাইনে সড়ক দুর্ঘটনার কথা লেখা থাকলেও ভিতরে এই দূর্ঘটনার ইস্যুতে সরকারী দল এবং বিরোধী দলের নানান কথাই খবর ছাপানো শেষ হয়েছে। তবে দূর্ঘটনা কিভাবে ঘটলো সেটা নিয়ে লেখা আর হয়নি।

এদেশে কোনো কিছু ঘটলেই হলো রাজনৈতিক দলগুলো এক হয়ে বিষয়টি সমাধান না করে, ববং একে অপরের উপর দোষ আরোপ করবতে থাকে। কফির কাপ শেষ হয়ে গেল তবে প্রত্রিকায় আরও কিছু খবর পড়া বাকিটুকু থাকলেও আর হলো না, কারণ ইতিমধ্যেই ইলেকট্রিসিটি চলে গেছে। সেই সাথে ছিলন না কোন কোন বিকল্প ব্যবস্থা। তাই কোন কিছু না করে নীরবে অন্ধকারের মাঝের বসে থাকলাম।

অবশেষে ঘন্টাখানেক পর বিদুৎ ফিরে আসল, তবে ততক্ষণে বৃষ্টির পরিমাণও অনেকটা কমে এসেছে। এতক্ষণ অন্ধকারের মধ্যে থাকার কারণে হাউজের ভিতরে কে কোথায় ছিল বা কি হচ্ছিল তা বুঝতে পারেনি। ইলেকট্রিসিটি ফেরারপেরে আশেপাশের টেবিলের দিকে তাকাতে লাগলাম। একটু আগে যারা ছিল তাদের মধ্যে বেশিরভাগই হাউজ ত্যাগ করেছে। কয়েক জন ছিল তারাও এখন হাউজ ত্যাগ করার জন্য উঠা শুরু করছে।

তবে হুট করে মনে পড়ল কোনায় সেই টেবিলের মেয়েটার কথা, যে আমার কাছ থেকে সিগারেট নিয়েছিলি। সেই টেবিল দিকে তাকিয়ে দেখি সেটাও ফাঁকাখালি রয়েছে। কিন্তু টেবিলের সিগারেটের টূকরো দেখে মনে হচ্ছে আমার থেকে সিগারেট নিয়ে তারা ধরিয়েছিল। কিছু সময় এদিক সেদিক তাকানোর পর বাহিরের দিকে লক্ষ্য করলাম ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়ছে সেই সাথে বিদ্যুৎ চমকানোর দৃশ্য আকাশে দেখা যাচ্ছে। তাই এবার হাউজ ত্যাগ করতে হবে বলে মনে মনে নির্ধারণ করলাম।

ওয়েটারকে ডেকে কফির বিল শোধ করতে হলে সেও অতিরিক্ত কিছু টাকা চাইবে। ওয়েকারকে ডাকার পরেই এসে বিলের সাথে অতিরিক্ত টাকা চাইল কারণ পুরাতন প্রত্রিকাটা পড়তে দিয়েছে বলে। অতিরিক্ত সেবা নিলে ওয়েটারদেরকে চার্জ দিতে হয়, আমি এর নিয়মের ব্যতিক্রম না হয়ে একটা নোট তার হাতে তুলে দিলাম এতই সে খুশি হয়ে বলল স্যার আবার আসবেন। অবশেষে টেবিল ছেড়ে উঠে হাউজ টা ত্যাগ করলাম।

ফুটপাতের রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করলাম। ওয়েটারদের জন্য একটা চার্জ নির্ধারিত করা উচিত, সেই চার্ট এ লিখা থাকবে অতিরিক্ত কোন সেবা নিলে কত টাকা বকশিশ দিতে হবে সেটাও লেখাও থাকবে। এই চার্ট খাবারের মেনুর সাথে দেওয়া হবে। যা দেখে নির্ধারিত করবে কে কোন সেবা ওয়েটারের থেকে নিবে। এমনকি মাঝে মাঝে এই সেবায় কিছু টা ছাড় দেওয়া হবে যাতে মানুষরা সেবা টা নিতে আগ্রহী হয়।

সফিকের সাথে বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলতে হবে ও আবার এইসব বিষয়ে সুন্দর করে নিয়মাবলী তৈরি করতে পারে তাই আপাতত বিষয়টি নিয়ে ভাবা বন্ধ করা যেতে পারে।

সালমান আবদুল্লাহ
এসএসসি পরীক্ষার্থী, তাহফিজুল কুরানিল কারিম ফাযিল মাদ্রাসা, ঢাকা

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]

Comments are closed.