নিলয় মনে মনে আজ বেশ খুশি কারণ সে তার ছোট বোনের কাছে এই সূত্রের প্রমাণ দিতে পেরেছে। তার বোন রীতিমতো সেটা বিশ্বাস করেছে, তাই মার খেলেও আজকে নিজেকে জয়ী বলছে।
সূত্রের কদর বাড়ানোর জন্য নিলয় আবার চুপিচুপি হিমা কে ডাকলো, হিমা এখন তার কিছু টা ভক্ত হয়ে গেছে তাই এক ডাকেই চলে আসে সে। যদিও না এসে তার উপায় নেই কেন না তারা তো শহরের চার দেয়ালের মধ্যে আটকে রয়েছে মাঠে খেলা বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে পারে না। হিমা যেহেতু মেয়ে তাই এদেশের সাংস্কৃতিক নিয়ম অনুসারে মেয়েদের যা করতে হবে ঘরের মধ্যেই করতে হবে বাহিরে পা রাখা যাবে না। সে রীতি অনুসারে হিমা কেও ঘরের ভিতর থাকতে হয় আর বাসার ভিতরে তার ভাই ছাড়া তার আর কেউ নেই, তাই নিলয় তার কাছে ভাই এবং বন্ধু দুটোই।
পড়ুন নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব ১
নিলয়ের ডাক শুনে এসে কাছে বসল। কি হয়েছে ডাকলে যে ভাইয়া,আবার কোন মন্ত্র জানতে পারলে তুমি? নিলয় কিছুটা মুচকি হেসে এবং নিজেকে কিছুটা জ্ঞানী প্রমাণ করার জন্য বলল, হিমা আজকে আমি ফুলদানিটা কি ইচ্ছে করে ভেঙ্গেছি নাকি ইচ্ছের বাইরে বলত ? হিমা সরাসরি এক কথায় বলে দিল, তুমি ভাইয়া সব কিছু তো ইচ্ছে করেই ভেঙ্গে থাকো এটা বলার কি আছে? হুম তুই ঠিক বলেছিস তবে বল তো কেন ইচ্ছে করে ভেঙ্গেছি? এবার হিমা ভাবনার ঘোরে পরে গেল কি কারণে তার ভাইয়া ফুলদানি ভেঙ্গেছে! আম্মুর কাছে মার খাওয়ার জন্য ভেঙ্গেছো কি ভাইয়া। না না কেউ তো আর ইচ্ছে করে মার খেতে চাই না, তাহলে ভাইয়া কেন ভাঙলো? কোন উত্তর খুঁজে না পেয়ে সে জিজ্ঞাসা করল, ভাইয়া তুমি ফুলদানিটা কেন ভাঙ্গলে?
এবার নিলয় বলল বলতো আমি তোকে কি বলেছি আমি কি একটা জিনিস পারি সেটা কি? এবার উত্তর দিতে পারবে তাই খুশি মুখে কিছুটা উল্লাসের সাথে বলল মার থেকে বাঁচার মন্ত্র পারো তুমি।
হুম সেটাই তো আমি যখন মন্ত্র টা জানতে পারলাম তখন ভাবলাম মন্ত্র টা আদৌ সত্য কিনা সেটা যাচাই করা দরকার, আর এর জন্য আমি ভাবতে লাগলাম কিভাবে প্রমাণ করা যায়। এমন কিছু করতে হবে যাতে কেউ আমাকে মারবে আর আমি তখন মার খাওয়ার মন্ত্র পড়ব আর আমার কোন মার লাগবে না।তাই আমি অনেক ভেবে এটা পেলাম যে, মা ছাড়া আমাকে কেউ মারে না, আর বাবা তো বেশিরভাগ সময় অফিসে থাকে। বাবা যত সময় কাছে থাকে আমাকে আদর করে তাই ভাবলাম মার টা খেতে হবে মায়ের কাছ থেকেই।
আর মায়ের থেকে মার খাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে কোন কিছু নষ্ট করা বা দামি কিছু ভেঙ্গে ফেলা। মা আমাকে মারবে আর আমি তখন সূত্রটা পড়ব তখন মারবে কিন্তু আমার মার লাগবে না।
নিলয়ের মুখ থেকে কথা গুলো শুনে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল হিমা, বাকিটুকু আর নিলয়ের বলতে হবে না সে নিজেই বলতে লাগলো। হিমা বলল তাই তুমি ফুলদানি টা ভেঙ্গে ফেললে? আমি ভাঙ্গা টুকরো গুলো ফেলে দিতে গেলাম আর মা দেখে ফেলল, আমি তোমার নাম বললাম আর তুমি মায়ের সামনে এসে দাঁড়ালে আর মা তোমাকে মারা শুরু করল। তুমি হুট করে মন্ত্র পাঠ করলে তোমার কোন মার লাগল না তাই না ভাইয়া? নিলয় বলল তুই বিষয়টি ধরতে পারছিস। তোর অনেক বুদ্ধি আছে তা্ই তারিফ না করে থাকা যায় না।
সালমান আবদুল্লাহ
এসএসসি পরীক্ষার্থী, তাহফিজুল কুরানিল কারিম ফাযিল মাদ্রাসা, ঢাকা।
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন
[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখার পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]]
Comments are closed.