নিলয় বলল তুই বিষয়টি ধরতে পারছিস। তোর অনেক বুদ্ধি আছে তা্ই তারিফ না করে থাকা যায় না। সিরিয়ালের মাঝে মগ্ন হয়ে আছেন তাদের মা রেহানা খাতুন। তাই তার আপাতত অন্য কিছু খেল নেই, রান্না-বান্না বাদে ঘরের টুকিটাকি করে সে সোজা চলে যান টিভির রুমে ওখানে বসে বসে নিয়মিত সিরিয়াল দেখে থাকে।
বলতে গেলে এটা এক ধরনের রুটিন হয়ে পড়েছে, অবশ্য এটা তার একার রুটিন নয়, এদেশের প্রায় সব মেয়েদের দৈনন্দিন রুটিনের মধ্যে একটি কাজ হলো সিরিয়াল দেখা, সে হিসেবে রেহেনা খাতুন তাদের দলের একজন।
পড়ুন নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব ১
পড়ুন নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব ২
ওদিকে অফিস থেকে ফিরে দরজার কলিং বেলে টিপ দিতে দিতে কান্ত হয়ে পড়ছে, কিন্তু ভিতর থেকে সাড়া শব্দ নেই এতে অবশ্য সে কোন চিন্তিত নয় নিলয় ও হিমার বাবা জহির সাহেব। জহির সাহেব খুব শান্ত স্বভাবের মানুষ ইচ্ছে করে হলেও তাকে রাগানো যায় না। কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর দরজা খুলল রেহানা খাতুন, খুলে বললো ওহ তুমি এসে পড়েছো? ছোট্ট করে সরল বাক্য বলল হ্যাঁ, তবে মুচকি হাসি চেপে ধরে আছে মুখে কারণ তার স্ত্রী মুখে বিরক্তির ছাপ ভেসে উঠেছে। সিরিয়াল চলাকালীন সময়ে তাকে যদি কেউ কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি করে তাহলে সে অনেক রেগে যায়, ঠিক এখনো রেগে আছেন তিনি।
জহির সাহেব কোন কথা না বাড়িয়ে ব্যাগ নিয়ে রুমে চলে গেলেন,ব্যাগ রেখে জামা কাপড় পরিবর্তন করে ছেলে-মেয়েদের রুমে একটা উঁকি দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলেন। রেহানা খাতুন কিছু টা বিরক্ত হয়ে বসে আছে কোন মতেই এখন সিরিয়াল টা শেষ মিস করতে চাচ্ছেন না তাই মনে মনে প্রার্থনা করছেন হিমার বাবা যেন ফ্রেশ হতে সময় বেশি ব্যায় করে তাহলে তার পর্ব টা শেষ হয়ে যাবে। এজন্য কিছু টা মনে মনে অস্থিরতা কাজ করছে। একটু পর তার সব আশার মধ্যে পানি ঢেলে দিয়ে বের হলেন শান্ত স্বভাবের মানুষ টি। তাকে দেখে কিছুটা রেগেই গেলেন মনে মনে বললেন বের হওয়ার আর সময় পেল না একটু দেরি করে বের হলে এমন কি ক্ষতি।
আমি একটু সিরিয়াল দেখছি তাও তার সহ্য হয় না এইসব বলতে বলতে দাঁত কিটমিট করতে লাগলো। নিলয়ের মা কর্তব্য পালনের রীতি অনুযায়ী টিভি ছেড়ে স্বামী কাছে গিয়ে দাঁড়াল ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও, কিন্তু জহির সাহেব তার স্ত্রীর মনের অবস্থা বুঝতে দেরি করেনি। তিনি কিছু টা হেসে বলে উঠল যাও তুমি বাকিটুকু শেষ করে আসো, না হলে তোমার আজকে কোন কাজ করতে পারবে না মনে মনে আক্ষেপ থেকেই যাবে। বরং তুমি সিরিয়াল টা শেষ করে তারপর এক কাপ চা নিয়ে আসো। রেহানা খাতুন আর কোন কথা না বাড়িয়ে চলে গেল টিভির রুমে কেন না জহির সাহেব কোন মিথ্যা কথা বলেনি, সে যা বলছে তা সত্যি বলছে। এবারের রাগ টা কে মনের ভিতর দাফন দিয়ে চলে গেল টিভির রুমে।
রেহানা খাতুন চলে যাওয়ার পর জহির সাহেব মনে মনে ভাবতে থাকলেন,এদেশের মেয়েদের এই ভারতীয় সিরিয়াল টা যে কি পেয়েছে আল্লাহ ভালো জানে। জীন ভূত টাড়ানোর মন্ত্র আছে কিন্তু কেন যে সিরিয়ালের ভূত টাড়ানোর মন্ত্র টা নেই। তাই সে হতাশ হয়ে রইল যদি কোন ভাবে সে মন্ত্র টা জানতে পারত তাহলে সবার আগে রেহেনা খাতুনের উপর প্রয়োগ করতো। ভারতীয় সিরিয়াল টা এদেশের সাংস্কৃতি নষ্ট করে দিচ্ছে, এদেশে কত ভালো মানের নাটক হচ্ছে যা রুচি সম্পন্ন কিন্তু তাও মানুষ ভারতীয় সিরিয়ালের পিছনে পড়ে আছে কেন তার উত্তর নেই!
তবে এতেও তাদের দোষ দেওয়া যাবে না, কারণ এদেশের মিডিয়া গুলো কোন অনুষ্ঠান প্রচার করতে গেলে অনুষ্ঠানের চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে বেশি সময় পার। এতে যার ফলশ্রুতিতে কেউ আর অনুষ্ঠান দেখতে আগ্রহী হয় না। এইসব কথা ভাবতে ভাবতে খববের কাগজ টা হাতে নিয়ে পড়া শুরু করল জহির সাহেব।
সালমান আবদুল্লাহ
এসএসসি পরীক্ষার্থী, তাহফিজুল কুরানিল কারিম ফাযিল মাদ্রাসা, ঢাকা।
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন
[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখার পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]]
[…] নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব ২পড়ুন নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব ৩পড়ুন নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব […]