কিরে? ভাইয়া তুমি ভেঙে ফেললে ফুলদানি টা আম্মু যদি দেখে তোমাকে মেরেই ফেলবে, আজ তুমি শেষ এই কথা বলে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলো নিলয়ের দিকে হিমা। নিলয়ের যেন কোন কিছু হলো না হিমা কথা শুনে। সে যেন শুনেও না শুনার মতো অবস্থা হয়ে গেছে হিমাকে বলল যা তো এগুলো ডাসবিনে ফেলে দিয়ে য়াই, অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল ভাইয়ের দিকে যেন কিছুই হয়নি তার মধ্যে মার কাছে মার খাওয়ার ভয় যেন মনের ভিতর নেই একটুও, সেদিন ধরে কি মারটা না মেরেছিলো তাও নির্ভয়ে কিভাবে বসে আছে ভাইয়া, এইসব ভাবছে তখন নিলয় একটু জোর গলায় বলল কিরে তুই এখন দাঁড়িয়ে আছিস ক্যান যা বলছি তাই কর? এগুলো ডাসবিনে ফেলে আই যা।
হিমা কোন কথা না বলে চুপচাপ ভদ্র মেয়ের মতো ভাঙ্গা ফুলদানি দুই হাতে তুলে ডাসবিনের উদ্দেশ্য রওনা দিলো। রান্না ঘর খাবার বানাতে ব্যস্ত তাদের মা রেহানা খাতুন। তাই সুযোগ পেয়ে আস্তে আস্তে ঘর থেকে বের হতে ছিল, ঠিক তখনই পায়ের শব্দ পেয়ে রেহানা খাতুন বলে উঠলো কোথায় যাচ্ছো। মার কন্ঠ শুনতে পেয়ে মনে মনে পাই শেষ হয়ে গেল সে এবং আমতা আমতা গলায় বলতে লাগলো এই তো মা-মা-বাকিটুকু বলার আগেই রেহানা খাতুন হিমার সামনে এসে দাঁড়ালো আর চোখ পড়লো হিমার হাতের দিকে হাতে ভাঙ্গা ফুলদানি দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো তার মা ককশ গলায় বলতে লাগলো এই ফুলদানি টা কে ভেঙ্গেছে? মার এমন কন্ঠ শুনে হিমা প্রায় তরল পদার্থের মতো ভিতরে ভিতরে গলে যেতে লাগল, কি বলবে মাকে বুঝতে পারছেনা।
কিরে?কথা কি কানে যায় না তোর ফুলদানি টা কে ভেঙ্গেছে তাড়াতাড়ি বল হিমা ভয়ে ভয়ে বললো ভাইয়া,,,,, বাক্য আর শেষ করার দরকার হয়নি, ওমনি দরজার আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো নিলয়, শান্ত ভঙ্গিতে বললো আমি ভেঙ্গেছি মা।
এমন ভাবে বললো যে সে কিছু করেনি কোন অপরাধ নেই তার নিলয়ের এই ঘটনা দেখে রাগ আরো বেড়ে গেল রেহানা খাতুনের ডান হাত দিয়ে সাথে সাথে কান মুড়ালি দিলেন, বললো জানিস তুই এটার কত দাম, কোন কিছুর কি মূল্য কি তোর কাছে নেই? এতো ভাঙ্গতে মন চায় যখন যা কামই করে কিনে ভাং। নিলয় চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে তার মধ্যে কোন পরিবর্তন যেন এলো না, তবে না আসারই কথা কেন না কথা গুলো তো আর নতুন শুনছে না সে প্রতিবার মার খাওয়ার আগে মার থেকে এইসব কথা শুনতে হয় তার তাই এখন তার কথা গুলো মুখস্থ হয়ে গেছে শুনতে শুনতে।
মা ছেলের কান্ড দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো হিমা কি বলবে বুঝতে পারছিলো না সে। সে জানে একটু পরে মা ভাইয়া কে ইচ্ছে মতো পেটাবে। আর রীতিমতো তাই হলো কথা শেষ হওয়ার আগেই মার শুরু করলেন মা। যেখানে ইচ্ছা সেখানে মারতে লাগলো এক পর্যায়ে মা কান্ত হয়ে পড়লে আর মারামারি বন্ধ হয়ে গেল। চুপচাপ নিলয় তখন ঘরে চলে গেল, নিলয় কে অনুসরণ করে তার সাথে হিমা রওনা দিলো ঘরের দিকে, তহহতহর ঘরে গিয়ে দেখে ভাইয়া শুয়ে আছে বালিশের দিকে মুখ করে আস্তে করে পাশে বসে বসে সান্ত্বনা মূলকবানী পেশ করতে লাগলো, তখন হুট করে উঠে বসে নিলয় বলল এমন ভাবে কথা বলছিস ক্যান তুই এমন ভাব ধরছিস না জানি কি ঘটে গেছে।
বিস্ময়কর ভাবে হিমা তার ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললো, কিছু হয়নি তোমার ভাইয়া? বরাবরই মতো সরল ভঙ্গিতে বললো না কিছু হয়নি আমার, সে উল্টো বললো তোর কি হয়েছে সেটা বল। মা তোমাকে যে এত মারল তুমি ব্যাথা পাওনি কোন? তোমার কি একটুও লাগেনি ভাইয়া?
একগাদা হাসিমুখে বলল না লাগেরে একটা মন্ত্র আছে যেটা পড়লে তোকে যে যতই মারুক না কেন, তুই কোন ব্যাথা পাবি না মনে হবে তোকে কেউ মারেনি। তাহলে কি তুমি আম্মু মারার সময় মন্ত্র টা পড়েছিলে নাকি? যার কারণে তোমার কোন কিছু হয়নি। নিলয় হেসে বলল হ্যাঁ পড়েছি বলেই তো এখন বেঁচে আছি না হলে এতক্ষণ আমার কি অবস্থা হতো বুঝতেই পারছিস। হিমার এখন কিছু বিশ্বাস করছে না, মনে মনে ভাবছে তাকে বুদ্দ বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে ।
হিমা উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিলো এটা আবার কেমন ধরনের মন্ত্র? ভূত তাড়ানোর জন্য মন্ত্র পড়ে সেটা শুনেছি, ছোট বাবুরা রাতে বেশি কাঁদলে মসজিদের হুজুরের কাছ থেকে পানিতে মন্ত্র পড়ে ফুঁ দিয়ে নিয়ে আসে সেটাও দেখছি কিন্তু মার খাওয়ার সময় মন্ত্র আছে সেটা তো আগে শুনিনি!!! ভাইয়া তুমি কি আমাকে মিথ্যা বলছো, আর মার লেগেছে বলে সম্মানের জন্য আমার সামনে ভাব ধরে বলতাছো মার লাগেনি। সত্যি করে বলোতো আসল ঘটনা কি? নিলয় বলে উঠলো শুন তোকে যে একটা গাধা বলে সেটা আমি ভুল বলি না, জানিস না বড়রা ছোটদের কখনো মিথ্যা বলেনা আমি জানি তোর বিশ্বাস হবে না তাই তোকে হাতে নাতে প্রমাণ দিচ্ছি তাহলে দেখবি তোর ঠিকই বিশ্বাস হবে। কথা শেষ করার আগেই কৌতুহলী করে হিমা বলল দেখাও তাহলে দেখি তোমার প্রমাণ ?
নিলয় শরীরের উপর পড়ে থাকা টি শার্ট টা উঠিয়ে তার যুক্তি দেওয়া শুরু করল দেখ যদি আমার শরীরের মার লাগতো তাহলে অবশ্যই আমার শরীরের দাগ বসতো, হিমা বলল হ্যাঁ। আমার শরীরে কোথাও কোন দাগ নেই, কেউ দেখলে বলবে না আমাকে যে মারছে সাথে সাথে না বলে হিমা একটু ভেবে চিন্তে বলল না তো! এখন তুই বল মার থেকে বাঁচার মন্ত্র আছে কিনা? হিমা অবশেষ বিশ্বাস করতে বাধ্য হলো যে মার খাওয়া থেকে বাঁচার মন্ত্র আছে।
সালমান আবদুল্লাহ
এসএসসি পরীক্ষার্থী, তাহফিজুল কুরানিল কারিম ফাযিল মাদ্রাসা, ঢাকা।
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন
[শিশুরাই তোলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখার পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]]
[…] নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব ১ […]
[…] পড়ুন নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব ১ […]
[…] পড়ুন নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব ১ […]
[…] নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব ১পড়ুন নিলয়ের ভূতুড়ে কান্ড-পর্ব […]