প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে জার্সি
প্লাস্টিক বর্জ্য আমাদের পরিবেশের জন্য এক বড় হুমকি। যা প্রতিনিয়ত পরিবেশের ক্ষতি করে যাচ্ছে। কঠিন এক বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে বিশ্বকে। তবে প্লাস্টিক দূষণ কমিয়ে আনতে সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার করে জার্সি তৈরী করতে দেখা মিলছে।
বর্তমানে সময়ে প্লাস্টিক যেমন সহজ করেছে দিয়েছে জীবন, তেমনি অন্যদিকে বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে বিশ্ব পরিবেশকে। প্লাস্টিক সহজে পচন হয় না। এতে প্লাস্টিক শত শত বছর ধরে টিকে থাকে। যার ফলে প্লাস্টিকের নানান জিনিস ব্যবহারের পরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া আশেপাশে বা নদীতে। এতে করে নদীতে থাকা জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে।
সমুদ্রবেষ্টিত দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কায় এর প্রভাব অন্য দেশের চেয়ে একটু বেশি। জাহাজ থেকে ফেলা প্লাস্টিক সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যের জন্য অনেক বড় হুমকি। দেশটির নৌবাহিনী চেষ্টা করেও সমুদ্র থেকে প্লাস্টিব বর্জ্য সরাতে পারলেও প্লাস্টিকের দূষণ কমাতে পারেনি। তাই প্লাস্টিক দূষণ কমিয়ে আনতে সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার করে জার্সি তৈরী করতে দেখা গেছে।
সমুদ্র থেকে তুলে আনা প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে তৈরি জার্সি ২০১৯ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল ব্যবহার করেছে। সমুদ্র সৈকত থেকে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য তুলে আনে। প্রথমে প্লাস্টিক থেকে বিশেষ ধরণের মণ্ড তৈরি করা হয়েছে, এরপর সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা হয় সুতা। সেই সুতা থেকে বোনা কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে লঙ্কান ক্রিকেট দলের পরিবেশবান্ধব জার্সি।
প্লাস্টিকের পরিমিত এবং পুনব্যবহার বিষয়ে দেশটির জনগনকে সচেতন করতে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের সাহায্যে সে দেশের পরিবেশবাদীরা এই কাজটি করতে সফল হয়েছে। ২০১৯ বিশ্বমঞ্চে প্লাস্টিক জার্সি পরে মালিঙ্গা-ম্যাথুসরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেই সাথে বিশ্ববাসীর কাছে প্রতীকীভাবে তুলে ধরেছে প্লাস্টিক ব্যবহার সচেতনতার প্রসঙ্গেও।
ভারতের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (আইপিএল) প্লাস্টিক থেকে জার্সি তৈরি করে ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত প্লাস্টিক দিয়ে জার্সি তৈরি করে ব্যবহার করেছে ব্রাজিল, ক্রোয়েশিয়া, নাইজেরিয়া সহ বিভিন্ন দেশকেও।
প্লাস্টিক থেকে জার্সি তৈরি যেমন পরিবেশবান্ধব তেমনি প্লাস্টিক দূষণ কমিয়ে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে সহায়তা করবে। একই সাথে বিশ্ববাসীকেও পরিবেশের ক্ষতির বিপদ থেকে মুক্তি দিবে।
লেখক: মো: সোহেল রানা
শিক্ষার্থী, উত্তরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন
[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]
Comments are closed.