বড় হয়ে তুমি কি হবে?

প্রত্যেকেই ছোট থেকে ইচ্ছে থাকে যে সে বড় হয়ে কি করবে? বা সে ভবিষ্যতে কি হতে চায়? কেউ কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউ চায় ইঞ্জিনিয়ার, কেউ চায় শিক্ষকতা, কেউ চায় ব্যাবসা করতে। এটা যার যার রুচি ও তার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। ভবিষ্যতে কে কি করবে এটা নিজে থেকেই সিন্ধান্ত নিতে হবে এবং যে অনুযায়ী কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হবে।

এক্ষেত্রে ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার নির্ভর করবে তোমার ইচ্ছা বা রুচির উপর। তবে এখানে পরিবারের ভূমিকাও অনেক। কারণ প্রত্যেক পরিবার চায় তাদের সন্তান ভবিষ্যতে বহুদূর এগিয়ে যাক, অনেক বড় হোক। তাই নিজের ক্যারিয়ারে নিজের পরিবারের ভূমিকা অনেক।

তবে একটা জিনিস সবচেয়ে জরুরি সেটা হচ্ছে নিজের ইচ্ছা আর কঠোর মনোবল। অনেক সময় দেখা যায় যে নিজের ইচ্ছা থাকার পরেও পরিবারের ইচ্ছানুযায়ী নিজের ক্যারিয়ার গঠন করতে হয়। এতে কিন্তু নিজের খুব বড় একটা ক্ষতি হয়ে যাবে৷ সেটা কেমন? তাহলে জীবনের শুরু থেকে আলোচনা করতে হবে।

ছোট থেকেই মানুষ বিভিন্ন পেশার মানুষদের দেখে এবং নিজের ইচ্ছাকে সেভাবেই দেখে। তখন কিন্তু সে তার আসল ক্যারিয়ারটাকে দেখেনি। দেখেছে অন্যের ক্যারিয়ার। আবার আরেকটু বড় হওয়ার পর দেখা যায় সে অন্য আরেকটা ক্যারিয়ারে নিয়ে এগিয়ে চলতে চায়। কিন্তু তখনও সে নিজের আসল ক্যারিয়ারটাকে বেছে নেয় না, কেবল কৌতুহলের ইচ্ছায় তা বেছে নেয়। তারপর আসে আসল সময়, তখন নিজে সবকিছু জেনে এবং বুঝেই নিজের ইচ্ছা বা ক্যারিয়ার গুছিয়ে নেয়। কারণ তখন সে বুঝতে পারে যে সে কোন বিষয়ে পারদর্শী এবং সে অনুয়ায়ী তার ভবিষ্যতের ক্যারিয়ারকে বেছে নেয়। তখন তার ইচ্ছাশক্তি থাকে প্রবল। ঠিক-ভুল বোঝার ক্ষমতা তার থাকে।

এখন আসি কেন নিজের ইচ্ছাটাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে? প্রথমে তো বলেই দিয়েছি যে, ”তুমি যে বিষয়ে পারদর্শী সেটাই হবে তোমার ক্যারিয়ার।” এখন তোমাকে কেউ যদি বলে বা সেটা হোক তোমার পরিবার এবং বলে তোমাকে আমাদের ইচ্ছানুযায়ী ক্যারিয়ার গুছিয়ে নিতে হবে। তবে তা যদি হয় তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তখন কি করবে? আমার জানামতে, তখন অধিকাংশ ব্যক্তিরাই নিজের ইচ্ছাকে ত্যাগ করে পরিবারের পছন্দের পেশায় যুক্ত হয়।

কিন্তু এখানেই সমস্যা! একজন ব্যক্তির ভবিষ্যতের কি হবে তা সে নিজেই ভালো জানে এবং সে অনু্যায়ী তার ছাত্রজীবন অতিবাহিত করে। এখন তাকে যদি অন্য পেশা বেছে নিতে হয় তখন কি সে পারবে এই প্রতিকূল পরিস্থিতিকে সামলাতে? মানে সে তো ছাত্রজীবনে নিজের ক্যারিয়ারের মতো করেই গড়ে তুলেছে এখন অন্য কিছুর জন্য অল্প সময়ে সে কিভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে তুলবে? এটা কিছুটা ব্যক্তিকে মানসিক সমস্যায় ফেলবে। কারণ কাজটি তার ইচ্ছা আকাঙ্খার বিরুদ্ধে হচ্ছে। তারমানে সে বাইরের পরিবেশটাকে মানিয়ে নিতে পারলেও ভেতর যে সে দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়বে। কারণ তার ইচ্ছে ছিল এক আর হচ্ছে আরেক।

এখন সবার উদ্দেশ্যেই কিছু কথা বলি। জীবনটা খুব সীমিত। মানুষ একটা নিদিষ্ট পরিমাণ আয়ু নিয়ে পৃথিবীতে আসে। এইটুকু সময়ের মধ্যে পৃথিবীর সাথে তাকে মানিয়ে চলতে হবে। সেটা কিভাবে? সেটা নিজের ইচ্ছা আর কঠোর মনোবল নিয়ে। যা কিছু হয়ে যাক না কেন যদি কারও মধ্যে কোন প্রবল ইচ্ছে থাকে একদিন তার জয় হবেই! মনে রাখতে হবে, “মানুষ কোন বিষয়ে একদম পারদর্শী হয় না, তার কাজ এবং মনের ইচ্ছেগুলোর জন্যই কেউ কোন কিছুতে পারদর্শী হয়ে ওঠে।“ নিজের ইচ্ছের জন্যই কিন্তু তুমি কোন কাজে পারফেক্ট হয়েছ। তাই সে ইচ্ছেগুলো ছেড়ে দিলে তোমার পারদর্শীতার কোন মূল্য নেই। তাই সেটাই কটর যেটা তুমি সঠিক ভাব।

নওশিন জাহান
দশম শ্রেণী, এডভোকেট খলিলুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়, জামালপুর।

[শিশুরাই তোলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখার পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]]

3 Comments
  1. Md.Minhaz ahmmed says

    তবুও অনেকটাই ভালো ছিলো

  2. Rafi says

    খুব সুন্দর হয়েছে

  3. […] পড়ুন: বড় হয়ে তুমি কি হবে?পড়ুন: আমরা কেন বিজ্ঞান শিখব?পড়ুন: মোটিভেশনাল ভিডিও সত্যি কি অনুপ্রেরণা করে? […]

Comments are closed.