পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রন্থাগার পড়া অপরিহার্য

প্রত্যেক শিশুকে জ্ঞানী ও আদর্শবান শিক্ষার্থী হিসেবে গড়তে হলে, পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রন্থাগার বই পড়তে হবে। পাঠ্যপুস্তক বই শুধু আমাদের শিক্ষিত হিসেবে গড়ে ওঠার প্রথম ধাপ। তাই আদর্শ শিক্ষার্থী এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য সমাজ থেকে শুরু করে বিশ্ব পর্যন্ত জানতে হবে। শুধু সুশিক্ষিত শিক্ষার্থী জাতির জন্য আদর্শ শিক্ষার্থী হতে পারে না

প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে জানতে হবে কিভাবে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া যায়। বই পড়লে একটা শিশু পড়ার পাশাপাশি অনেক আনন্দ পাবে ও নতুন কিছু শিখতে পারবে, বই শুধু আমাদের জ্ঞানই দেয় না, মনকে হাসি খুশি প্রফুল্ল রাখতে সহায়তা করে। বই দুঃখের সময়ে আপনজনের মতো পাশে থাকে। একটা শিশু যখন ছোট থেকে বই পড়ার অভ্যাস শুরু করবে তখন থেকেই তার বই পড়ার প্রতি নেশায় পড়বে।

তবে একটা শিশু কখনো বাজে কাজে বা মাদকাসক্তিতে জরিয়ে না এবং এই শিশু কখনো কখনো এমন কাজ জরিয়ে পরবে না যা তার পরিবার অন্য সদস্য কষ্টের ফল ভোগ করুক।

বই শিশু ও শিক্ষার্থীকে এমন উপকারীও করে দিতে পারে যা জীবনে থেকে কখনো হারিয়ে যাবে না। প্রতিটি বই থেকে কিছু না কিছু নতুন জানা যায়, যে কোনও সমস্যা সমাধানের নতুন নতুন পথ ভাবতে সাহয্য করবে। বই পড়ার অভ্যাস করলে নিজেই একটা সময়ে বুঝতে পারবে মনের অনেক নতুন জানালা খুলে গেছে। মানুষ হিসেবে সমৃদ্ধ হবে। জ্ঞান যত বাড়বে, বুদ্ধি ততই ধারালো হবে। একটি তরবারিকে যেমন ধারালো রাখার জন্য শাণপাথর দিয়ে শাণ দিতে হয় তেমনি মস্তিস্ককেও শাণ দিতে হয় বই দিয়ে। মস্তিষ্ককে বিষয়ে কাউকে বোঝাতে গেলে, বা নিজে বুঝতে গেলে সেই বিষয়ে যত জ্ঞান থাকবে, কাজটি ততটাই সহজ হয়ে যাবে। আর এই ক্ষেত্রে বই পড়ার কোনও বিকল্প নেই। জ্ঞান বাড়ার সাথে সাথে বুদ্ধি দ্রুততম বাড়বে।

পৃথিবীর বেশিরভাগ বড় বড় সফল মানুষের মারাত্মক বই পড়ার নেশা ছিল। বই পড়বে তখন একটি নতুন জগতে প্রবেশ করবে। একটু একটু করে সেই জগৎ আর তার বাসিন্দাদের ছবি মনে স্পষ্ট হয়ে উঠতে থাকবে। সেইসাথে ধারালো হতে থাকবে কল্পনাশক্তি। মহামানব ও বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) সহ ধর্মীয় মনীষীদের জীবনী থেকে শুরু করে নিজের দেশীয় সহ বিশ্বের সকল মহৎ ব্যাক্তির জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে নৈতিকভাবে উত্তম চরিত্র গঠন করতে পারবে।

শৈশবকাল থেকে প্রত্যেক শিশুকে ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষা নেওয়া অপরিহার্য। এছাড়া কিভাবে ১৯৭১ সালের বাংলার সাহসী দামাল ছেলেরা বিজয় অর্জন করেছিল তা সকল শিশু জানতে হবে, মুক্তিযোদ্ধার বিভিন্ন সংগ্রামী বই পড়ে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কিছু বই, একাত্তরের দিনগুলি (জাহানারা ইমাম), একাত্তর করতলে ছিন্নমাথা (হাসান আজিজুল হক), হায়েনার খাচায় অদম্য জীবন (মন্টু খান), গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধে (মাহবুব রহমান) এবং আমার একাত্তর (আনিসুজ্জামান) ইত্যাদি।

বাংলাদেশের জাতীয়, পল্লী কবিসহ বিভিন্ন কবির জীবনীর বই পড়ে জানতে হবে, কিভাবে তারা জীবনের কঠিন মূহুর্ত থেকে শুরু করে সাফল্য অর্জন করেছিল। বাংলার কবি ও মনীষীদের মধ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লী কবি জসীমউদ্দীন, বাংলার বাঘ এ কে এম শেরে ফজলুল হক ও ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যা সাগর সহ সাফল্যময় গুনীব্যাক্তীর জীবনী জানা অপরিহার্য।

তবেই একজন শিশু বা শিক্ষার্থী তাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে সাফল্য অর্জন করার জন্য পিছু পা হবে না। বাংলার ছেলেরা অদম্যভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সাহসী হবে। অবসর সময়ে অলসভাবে বাজে কাজে সময় ব্যয় না করে নিজ নিজ ধর্মীয়, সাহিত্য, ম্যাগাজিন, নতুনবিশ্ব ও বিজ্ঞানের সহ ইত্যাদি বই পড়তে পারে। এছাড়া বই পড়ার মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ইত্যাদি জানতে পারবে।

লেখক: মো: সোহেল রানা
শিক্ষার্থী, উত্তরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]]

Comments are closed.