জুমার দিনের ফজিলত ও বিশেষ আমল

রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, জুমার দিন দিবসসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুমার দিন থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহের জন্য কাফ্ফারা হবে (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)।

জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমলের কথা হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো।

১. প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করা ফজিলতপূর্ণ। এর মধ্যে শুক্রবারে ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করা বেশি ফজিলতপূর্ণ। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো শুক্রবারের ফজরের নামাজ। যা জামাতের সাথে আদায় করা হয় (সিলসিলাতুস সহিহা-৪/৯১)।

২. গোসল করা।

৩. উত্তম পোশাক পরিধান করা।

৪. সুগন্ধি ব্যবহার করা।

৫. আগে আগে মসজিদে যাওয়া : এই দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে আগে আগে মসজিদে যাওয়া। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বোঝো’ (সূরা জুমা, আয়াত : ৯)।

রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, জুমার দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি মোটাতাজা উট কোরবানি করে। এরপর যে আসে সে ওই ব্যক্তি যে একটি গাভী কোরবানি করে। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগি দানকারীর মতো। তারপর ইমাম যখন বের হন তখন ফেরেশতাগণ তাদের লেখা বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগসহকারে খুতবা শুনতে থাকেন (বুখারি, হাদিস : ৯২৯)।

৬. সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা : আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে, তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)।

৭. বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা : এই দিনের আরেকটি আমল হচ্ছে নবীজীর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। এই মর্মে রাসূল সা: বলেন, তোমরা এই দিনে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)।

৮. মসজিদে এসে জিকির, তেলাওয়াত ও ইবাদত ভিন্ন অপ্রয়োজনীয় অন্য কোনো কথা না বলা : হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, নবীজী সা: বলেছেন, জুমার নামাজের খুতবার সময় তুমি যদি তোমার সাথিকে চুপ থাকতে বলো, তবে এটাও তোমার অনর্থক কাজ হবে (বুখারি-হাদিস : ৯০৬)।

৯. বিশেষ করে দোয়ার গুরুত্ব দেয়া : জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ একটি আমল হচ্ছে দোয়ার প্রতি মনোনিবেশ করা। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, জুমার দিনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে একটি বিশেষ মুহূর্ত এমন আছে যে, তখন কোনো মুসলমান আল্লাহর নিকট যে দোয়া করবে আল্লাহ তা কবুল করেন (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুন।

Comments are closed.