“আম চুরি অতঃপর নানুর উপদেশ”

কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রিয় বন্ধুদের সাথে দেখা হচ্ছে না, নওশি, রাদ আর তানি এরা একে অপরের প্রাণের বন্ধু। যেন তিনজনই একে অপরের পরিপূরক। কিছু দিন আগে পরীক্ষা শেষ হয়েছে তাই স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের আর দেখা হচ্ছে না।

সপ্তাহ খানেক পরে তাদের প্রিয় স্কুলটির কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়। ক্লাস চলমান হঠাৎ করে নওশি, রাদ এবং তানিকে এক এক করে তিনজনকেই দাঁড় করাই ক্লাস শিক্ষক আফজল স্যার। কারণ তারা একে অপরের সাথে কি বিষয় নিয়ে নাকি ফিস ফিস করে কথা বলতেছিল। অবশেষে ক্লাস শেষ তাই নওশি, রাদ আর তানিকে বসার অনুমতি দেয়!

তাদের পরিকল্পনা ছিল বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর তারা তিনজন মিলে রাদের নানার বাসার পেছনে নানুর আম বাগানে আর চুরি করতে যাবে। বৃহস্পতিবার, স্কুল ছুটি হয়ে গেছে তাই তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা তিনজনই মিলে গ্রামের আকাঁ-বাকা রাস্তা ধরেই রওনা দিল রাদের নানার আম বাগানের দিকে আম চুরি করতে! কিছুক্ষণ পর সবাই মিলে পৌঁছে গেল রাদের নানার আম বাগানে। রাদ আম গাছে উঠল, এক এক করে অনেক আম পাড়ল রাদ। আর তানি তা কুড়িয়ে ব্যাগে রাখছে।

অন্যদিকে, নওশি রাজ্য পাহারাদারদের মতো পাহারা দিতে ব্যস্ত। সব কুড়িয়ে রওনা দিতে যাবে ঠিক তখনই বাগানে মালিক মানে রাদের নানা এসে হাজির। রাদের নানাকে দেখে ভয়ে তাদের একেক জনের মুখ ভয়ে লাল হয়ে গিয়েছিল। তখনই রাদের নানা বললে,  ভয় পেয়ো না তোমরা, তোমাদের বকা দিব না। তবে কিছু কথা বলবো শুনবে তো তোমরা?

কথাগুলো রেখে দিলাম স্মৃতির পাতায়

সে সময়ে সাথে সাথে তানি বললো জ্বি নানা আমরা আপনার কথা শুনবো। তবে শুন তাহলে তোমাদের যদি আম খাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছে তাহলে আমাকে তো বললেই পারতে, চুরি করার কি প্রয়োজন ছিল? আর রাদ তোমাকে আমি এ শিক্ষা কখনো দেয়নি।

তুমিও তো অন্তত আমাকে বলতে পারতে একবার। প্রয়োজন হলে আমি তোমাদের আম পেরে দিতাম। আজ এই বাগানটি যদি আমার না হয়ে অন্য কারোর হতো তাহলে এতক্ষণে এ নিয়ে তোমাদের বাবা-মায়ের কাছে বিচার দিতো মালিক। এমনকি তোমাদের জন্য বাবা-মায়ের সম্মান নিয়ে কথা বলাও হতো। গ্রামের সকলের কাছে অপমানিত, লজ্জিত হতো। এতে তোমাদের বাবা-মা কষ্ট পেতেন।

একটা বিষয় মনে রাখবে, সকলের সবচেয়ে সম্মানীয় ব্যাক্তি বাবা-মা, আল্লাহ তালা তাদের স্থান সকলের উপরে রাখছেন। তাই বাবা-মাকে কখনো কষ্ট দেওয়া যাবে না।

কখনো কারো জিনিস নিতে হলে প্রথমে তার অনুমতি নিতে হবে। তবে অনুমতি না পেলে সেই জিনিসের প্রতি আক্ষেপ করা যাবে না। তোমরা যা করেছো তা অবশ্যই ভুল করেছ। আশাকরি ভবিষ্যতে আর এমন কাজ নিজেরা করবে না এবং অন্যদেরকেও এ ধরনের কাজ করতে দিবে না। নিজেদের ভুল বুঝতে পেয়ে রাদের নানার কাছে সচ্চরিত্রবান হতে দোয়া চাইলেন তারা।

প্রিয় বন্ধুরা, আজকের গল্প থেকে কি কি শিখতে পারলেন তা অবশ্যই “ভয়েস অফ হ্যালো’র ঠিকানায় মেইল করে জানাতে ভুলবেন না।

মো: আরমান
শিক্ষার্থী, দশম শ্রেণি, পেকুয়া সরকারি মডেল জি এম সি ইনষ্টিটিউশন, কক্সবাজার

“ভয়েস অফ হ্যালো”র ফেসবুক ক্লিক করুন
“ভয়েস অফ হ্যালো”র ইউটিউব ক্লিক করুন

[শিশুরাই তুলে ধরবে শিশুদের অধিকারের কথা, আপনিও লিখুন আপনার কথা। লেখার পাঠানোর ঠিকানা [email protected]] 

Comments are closed.